মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি :
মানিকগঞ্জ পৌরসভায় এক অটোরিক্সার লাইসেন্স বিক্রি হচ্ছে লাখ টাকায়। পুরোনোদের নবায়নের সুযোগ না দিয়ে সাড়ে পাঁচশ ইজিবাইকের লাইসেন্স বাতিল করার পর টাকার বিনিময়ে নতুনভাবে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, নিয়ম না থাকলেও কাউন্সিলররা পৌর এলাকার বাইরের লোকজনকেও লাইসেন্স দিচ্ছেন। এ অবস্থায় বাতিল ঘোষণা করা লাইসেন্সের মালিকরা চলতি নবায়নের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।
অটোরিক্সা চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৌর এলাকায় চলাচলকারী অটোরিক্সাগুলো শৃঙ্খলায় আনতে ২০১০ সালে লাইসেন্সের আওতায় আনে পৌর কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে প্রতি বছর নবায়নের মাধ্যমে ইজিবাইকগুলো চলাচল করছে। কিন্তু গত ২৮ অক্টোবর পৌরসভার এক সভায় আগের ৫৫০টি ইজিবাইকের লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হয়। সিদ্ধান্ত হয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররা নতুন লাইসেন্সের জন্য সুপারিশ করবেন। প্রতি ওয়ার্ডে ৩৫টি ইজিবাইক লাইসেন্সের সুপারিশের ক্ষমতা দেওয়া হয় কাউন্সিলরদের।
চালকদের অভিযোগ, এই সুযোগটিই কাজে লাগাচ্ছেন কাউন্সিলররা। প্রকৃত অটোরিক্সা মালিকদের বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতি ও অর্থের বিনিময়ে লাইসেন্স প্রদান করা হচ্ছে। ফলে বর্তমানে লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেশিরভাগ অটোরিক্সা মালিক নতুন লাইসেন্স সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এদিকে চলতি নবায়নের দাবিতে মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শতাধিক অটোরিক্সা মালিক-চালক মানিকগঞ্জ পৌরসভায় অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। এরপর তারা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রেস ক্লাব চত্বরে মানববন্ধন করেন।
অটোরিক্সা মালিক হযরত আলী বলেন, পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর নবায়ন ফি জমা দিয়ে তিনি অটোরিক্সা চালিয়ে আসছেন। যাত্রী টেনে প্রতিদিন যা আয় হয় তা দিয়েই চলে তার পাঁচ সদস্যের পরিবার। কিন্তু হঠাৎ করেই পৌরসভা তারসহ সাড়ে পাঁচশ লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন লাইসেন্সের জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে গেলে তিনি এক লাখ ২০ হাজার টাকা দাবি করেন।
কামাল হোসেন নামের আরেক অটোরিক্সা চালক জানান, টাকা নিয়ে পৌরসভার বাইরের লোকজনের লাইসেন্স বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। অথচ তারা প্রকৃত অটোরিক্সা মালিক হওয়ার পরও লাইসেন্স পাচ্ছেন না।
পৌরসভার হ্যালোবাইক চালক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন খান বলেন, নিবন্ধনের নামে কাউন্সিলরদের চাঁদাবাজি ওপেন সিক্রেট। কেবল চালক মালিকরাই নন, সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাসহ শহরের সচেতন সবাই এই চাঁদাবাজির বিষয়টি জানেন। তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে তা আদায় করা হবে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে পৌর মেয়র রমজান আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি মানিকগঞ্জের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে প্যানেল মেয়র আব্দুল রাজ্জাক রাজা বলেন, ‘অর্থের বিনিময়ে অটোরিক্সার লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। পৌর মেয়র যাচাই-বাছাই করে উপযুক্ত ব্যক্তিকে লাইসেন্স দিচ্ছেন।’
জাগো নিউজ